এক মাস! প্রায় এক মাস পর আজকে দিনযাপন লিখছি! শেষ লিখেছিলাম ২৬ জুলাই! …
মরার ওপরেই তো সবসময় খাঁড়ার ঘা আসে! আমার ক্ষেত্রেও তাই! … নেটবুকের একটা কি কেবল পুড়ে গেছে, এখন প্রায় ৩ সপ্তাহ হয়ে গেলো নেটবুক সার্ভিস সেন্টারে জমা! এই শনিবারে হয়তো দেবে … তো এর মধ্যেই স্কুলের দুনিয়ার ব্যস্ততা আর জাপানিজ স্টাডিজের সেমিস্টার ফাইনাল চলছে … মাঝখানে আবার এক সপ্তাহে রবি থেকে বুধ চারদিনই স্কুলের পরে বিবিসি দৌড়ালাম … ওদেরই একটা কাজ করছিলাম যখন নেটবুকটা নষ্ট হলো … সো, ল্যাপটপের অভাবে যাতে কাজ বন্ধ না হয়ে যায়, সেজন্য নিজের গরজেই দৌড়ালাম …
নেটবুক নষ্ট হবার পেছনে গাফিলতি আমারই … কাহিনী হচ্ছে যে ওই সময় বিবিসি’র উজান গাঙয়ের নাইয়া নামের একটা নাটকের ট্রান্সলেটেড স্ক্রিপ্ট এডিটের কাজ করছিলাম … ভিডিও দেখে স্ক্রিপ্টে ঠিকঠাক করতে হয়েছে যে কোন দৃশ্য কোথায় শাফল হয়েছে, নতুন ডায়ালগ যোগ হয়েছে কি না ইত্যাদি ইত্যাদি … তো আগস্টের ৫/৬ তারিখের দিকের কাহিনী এইটা … ওইদিন শুক্রবার ছিলো, আর আমি সারাদিনই ২/৩টা স্ক্রিপ্ট এর কাজ করে রাতের বেলা উজান গাঙয়ের নাইয়ার নেক্সট যে এপিসোডটা নিয়ে কাজ করবো সেটা দেখছিলাম ইউ টিউবে … এর মধ্যেই ঘুমিয়ে গেছি কয়েকবার … তো ঘুমের মধ্যে একবার ওই ভিডিও চলা অবস্থাতেই নেটবুকটার মনিটরটা হাত দিয়ে নামায় দিয়ে আমি আবার ঘুমায় গেলাম … নেটবুকে যে চার্জারও কানেক্টেড ছিলো না সেটাও মাথায় নাই … সকালে উঠে আবিষ্কার করলাম যে নেটবুক পুরাই মৃত! ওইদিনই মাল্টিপ্ল্যানের যেই দোকান থেকে কিনেছিলাম, ওদের কাছে সার্ভিসিং-এ দিয়ে আসছি। আমি ভাবছিলাম যে ভেতরে গরম হয়ে ব্যাটারি জ্বলে গেছে হয়তো। পরে জানলাম যে ব্যাটারি ঠিকই আছে, কিন্তু ভেতরে কি একটা কেবল পুড়েছে। সার্ভিস সেন্টারের লোক আমাকে দুই/চারবার কেবলটার নাম বলেছে, কিন্তু আমি কিছুই বুঝিনাই! যাই হোক, বিবিসি’র কাজটা তো করতে হবে! পরে মারুফ ভাইয়ের সাথে কথা বলে বিবিসি’র অফিসে গিয়ে ওদের ল্যাপটপে কাজ করেছি কয়েকদিন … ভার্সিটির ক্লাস-টাস সব বাদ! …
যাই হোক … এরপর টিয়ামের কাছ থেকে ধার করে ল্যাপটপ নিয়ে আসছিলাম। দুইদিনের কথা বলে এক সপ্তাহের বেশি রেখে দিলাম। পরীক্ষাও শুরু হলো এর মধ্যেই … অন্তত পরীক্ষার পড়ালেখার জন্য তো ল্যাপটপ লাগবে! … এদিকে টিয়ামেরও তো ল্যাপটপ লাগবে … পরে মা তার ডিপার্টমেন্ট থেকে মাল্টিমিডিয়ার ক্লাসে যেই ল্যাপটপ ইউজ করে সেইটা নিয়ে আসছে কয়েকদিনের জন্য …
মোটামুটি মানুষের ল্যাপটপের উপর দিয়েই দিনকাল চলছে আর কি! … খালি নেট ব্রাউজ আর জরুরি ডকুমেন্টের কাজ ছাড়া আর কিছুই কাজ হচ্ছে না … তাও ভালো যে আমার নেটবুকের হার্ডডিস্ক যায় নাই … তাইলে তো কপাল চাপড়ানো ছাড়া কিছু করার থাকতো না! কত মানুষের কত ছবি জমে গেছে গত দুই/তিন মাসে! কাউকে তাদের কোনো ছবি দেয়া হয়নি … এমনকি ফেসবুকেও না যে হারায় গেলে অন্তত ফেসবুকের লো রেজুলেশন ভার্সনটা থাকবে তাদের কাছে! …
এই যে একমাস দিনযাপন লেখা হলো না … কত কিছু হইলো এর মধ্যে! অথচ সেগুলো নিয়ে গরম গরম লেখার আর সুযোগ হলো না … ইতিহাসের এত সালেরেই দিনে এইটা হয়েছিলো টাইপ ঘটনাও এইগুলা না … একেবারেই ইন্সট্যান্ট না লিখলে ওই ঘটনার আসল মহিমা বোঝা যায় না … যদি অদূর কিংবা সুদূর ভবিষ্যতে কোনো প্রসঙ্গক্রমে লেখার সুযোগ হয়, তাইলে লিখতে হবে আর কি! …
আমি ভাবছিলাম যে আমার নেটবুক হাতে না পাওয়া পর্যন্ত দিনযাপন লিখবো না … কিন্তু গত দুই/তিন যাবৎ খুবই হাত নিশপিশ করছে দিনযাপন লেখার জন্য। কতদিন হয়ে গেলো! … অবশ্য ওয়ার্ডপ্রেসে ঢুকতে বেশ ঝামেলা পোহাতে হবে শিওর … দেখা যাবে পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি … নইলে ইউজার আইডি শুদ্ধাই ভুলে গেছি! … প্রতিবার কোথাও না কোথাও লিখে রাখি, তারপর কোথায় লিখে রেখেছি সেটাই ভুলে যাই! … কি যে এক আজিব যন্ত্রণা! … পাসওয়ার্ড জাতীয় বিষয়-আষয়গুলা ভুলে যেতে যেতে আমি ক্লান্ত!
আজকে অনেকদিন পরে একটা খুব রিলাক্সড দিন গেছে … কোনো কাজের চিন্তা মাথায় নাই টাইপের একটা দিন … পড়ালেখাও করলাম না … কাল-পরশু তো সময় আছেই … রবিবারে নেক্সট পরীক্ষা … সারাদিন শুয়ে-বসে-ঘুমায় কাটিয়ে সন্ধ্যায় টিয়ামের বাসায় গিয়ে কতক্ষণ সময় কাটায় আসলাম … বের হবো হবো করছি এমন সময় ঝুম বৃষ্টি নামলো … ফলে বের হলাম আরো ঘন্টাখানেক পর … এদিকে বের হবার সময় নিচে টিয়ামদের দারোয়ান বললো, আপনি যেদিনই আসেন, সাথে করে বৃষ্টি নিয়ে আসেন … এরপর যেদিন এরকম অনেক গরম থাকবে, এই বাসার দিকে চলে আইসেন! … আমি ভেবে দেখলাম যে আসলেই আমি লাস্ট যেই কয়েকদিন টিয়ামের বাসায় আসছি, আমি আসার আগে বা পরে বৃষ্টি হয়েছে … একেবারে ঝুম বৃষ্টি … একদিন তো পুরাই কাকভেজা হয়ে টিয়ামের বাসায় গেছি ! …
আজকে সকালটা শুরু হয়েছে একটা খাঁটি বিনোদন দিয়ে … সকালে ৯টার দিকে ঘুম ভেঙ্গেছে … মোবাইল হাতে নিয়ে ফেসবুকের নোটিফিকেশন দেখতে দেখতে আবিষ্কার করলাম যে সঞ্জয় আমাকে ফেসবুকে মেসেজ পাঠিয়েছে, ‘অই কেমন আছো?’ … আবার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টও পাঠিয়েছে … আমি ব্যাপক বিনোদিত হয়ে হাসতে হাসতে শেষ! প্রথমে ভাববার চেষ্টা করলাম, এখন ওর উদ্দেশ্যটা কি হতে পারে আবার যোগাযোগ করার … কিংবা, এখন আবার হঠাৎ এরকম আবেগ উথলায় উঠার মানে কি যে একেবারে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়, মেসেজ পাঠায় অস্থির অবস্থা! আমার জানামতে আমাকে তো সে ব্লক করে রেখেছিলো ফেসবুকে! মানুষ পারেও! যেই কাহিনী প্যাচাইসে সে রাহুল দা আর কনক দা’র কাছে আমাকে নিয়ে, এবং শেষমেশ তার সাথে আমার যেই অ্যাপ্রোচের কথাবার্তা হইসে, তাতে করে ৩ বছর পরে এসে একেবারে ‘নাথিং হ্যাপেন্ড’ টাইপ টোনে ‘অই কেমন আছো?’ বলে মেসেজ পাঠানোও তার পক্ষে সম্ভব! … আমি একবার ভাবসিলাম যে কোনো উত্তর দেবো না … পরে ভাব্লাম যে উত্তর দিলে বিনোদনের আরো এলিমেন্ট বের হইতে পারে … সেজন্যে ‘হুম, ভালো’ লিখে রিপ্লাই দিয়ে রাখসিলাম … দেখলাম যে রিপ্লাইটা সে দেখসে, কিন্তু তারপরে সারাদিনে আর কোনো রেস্পন্স করে নাই … যারা আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড না, তারা আমার দিনযাপনের লিঙ্ক দেখতে পারে কি না আমি জানি না … যদি দেখতে পায়, আর যেকোনো ভাবে এটা পড়ে, তাহলে আরো এক প্রস্থ বিনোদন পেলেও পেতে পারি! …
মানে, আমি আসলে বুঝি না … এইসব সঞ্জয়, সোহেল টাইপের ছেলেরা আমাকে কি ভাবে, আর নিজেদেরকেই কি ভাবে! …
যাই হোক, অত কিছু এখন বুঝতে চাই না … সারাদিন অনেক ঘুমাইসি … তাও ঘুম আসতেসে … কালকে আবার সকাল সকাল উঠে বের হতে হবে … গাউসিয়ার দিকে যাবো … এইরকম বৃষ্টি না থাকলেই হয় কালকে … বৃষ্টি হইলেই তো আর বাসা থেকে বের হতে ইচ্ছা করে না! … তাও আবার যদি ডেস্টিনেশন হয় গাউসিয়া! … এখন শুয়ে থাকবো … কালকে রাতে ঘুম হয় নাই ভালো … অনেক রাত পর্যন্ত ঘুম আসে নাই … ফলে সারাদিনই কেমন ঝিমুনি ঝিমুনি ভাবসাব নিয়ে কাটসে … তারওপর এমন গরম! … ভাদ্র মাস আসতে না আসতেই এই অবস্থা! … খালি তো তাল না,মনে হয় মাথার ভেতর ব্রেইনশুদ্ধা পেকে যাবে এবার! … গরমের চোটে সারাক্ষণ কেমন মাথাব্যথা করে! … মাঝে মাঝে ভাবি চুলগুলা কেটে একেবারে বয়কাট করে ফেলি … এত অসহ্য লাগে এই চুল ভেজানো, চুল শুকানো ব্যাপারগুলা! … চুলে শ্যাম্পু করে ধুয়ে দিয়ে আবার ড্রায়ার দিয়ে শুকায় দেয়ার জন্য একটা কেউ যদি রেগুলার থাকতো, তাইলে খুব ভালো হইতো! একেবারে পার্লারের মতো …
ওয়েল, আজকে শেষ করি … আগামীকাল যদি আবারো মুড থাকে তাহলে কালকে আবার দিনযাপন লিখবো …
মকুইয়োবি, নিজু’গো নিচি/ হাচিগাৎসু/ নিসেনজু’রোকু
[ জাপানি ভাষায় লিখলাম আর কি! বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট ২০১৬ … নতুন নতুন শিখতেসি এসব … দিনযাপনের পাতাতেই না হয় প্র্যাক্টিস করতে থাকি! ]